, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


ছাগলকাণ্ডে এনবিআরের পর সোনালী ব্যাংকের পদও হারাচ্ছেন মতিউর!

  • আপলোড সময় : ২৩-০৬-২০২৪ ০৪:০৯:৫৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-০৬-২০২৪ ০৪:০৯:৫৮ অপরাহ্ন
ছাগলকাণ্ডে এনবিআরের পর সোনালী ব্যাংকের পদও হারাচ্ছেন মতিউর!
এবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সরিয়ে দেয়ার পর এবার সোনালী ব্যাংক থে‌কেও সরিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মতিউর রহমানকে। রোববার (২৩ জুন) সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানান, সোনালী ব্যাংকের আজকের বোর্ড সভায় পরিচালনা পর্ষদ সদস্য হিসেবে তিনি অনুপস্থিত রয়েছেন। তাকে পরিচালনা পর্ষদ থেকে সরিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। যদিও আজকের বোর্ড সভায় ব্যাংকটির প‌রিচালক মতিউর রহমানকে উপস্থিত থাকতে আগেই নিষেধ করা হয়েছিল।

তবে এ বিষয়ে জানতে সোনালী ব্যাংকের পর্ষদ চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকীকে ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এদিকে রোববার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এনবিআর সদস্য এবং কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমানকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হলো। তবে কেন এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, প্রজ্ঞাপনে তা উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়েছে, ‘জনস্বার্থে জারিকৃত এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
 
এর আগে ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবস্থিত ‘সাদিক এগ্রো’ ফার্ম থেকে এগ্রো বিটল প্রজাতির খাসি ১৫ লাখ টাকায় কিনে আলোচনায় আসেন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামের এক যুবক। সাদিক এগ্রোতে গিয়ে ক্যামেরার সামনে ওই ছাগলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ইফাত বলেন, ‘এ রকম একটি খাসি কেনা আমার স্বপ্ন ছিল। এ রকম খাসি আমার জীবনে প্রথম দেখা। এটা আমার হবে, জানা ছিল না। আল্লাহ নসিবে রাখছে, তাই হইছে। ১১ জুন এটি ধানমন্ডি-৮ এ ডেলিভারি দেয়া হবে।’
 
ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে গুঞ্জন ওঠে, তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে। রাজস্ব কর্মকর্তা বাবার দুর্নীতির টাকায় তিনি ১৫ লাখ টাকায় খাসিটি কিনেছিলেন। এ ঘটনায় ওই ছেলে ও তার বাবাকে নিয়ে ফেসবুকে চলছে বিস্তর সমালোচনা। বিভিন্ন পোস্ট ও কমেন্টে খাসির ক্রেতা যুবকের বাবার দুর্নীতি নিয়ে তদন্তের দাবি উঠেছে। তবে ইফাত নিজের সন্তান নন বলে দাবি করেন মতিউর।
 
এদিকে ছাগলের হিসাব-নিকাশ বাদ দিয়ে এখন আলোচনা চলছে মতিউর রহমানের সম্পদ নিয়ে। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি এই কর্মকর্তা দুর্নীতির মাধ্যমে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। এরইমধ্যে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য জানতে মাঠে নেমেছে। প্রাথমিকভাবে বেশ কিছু সম্পদের তথ্যও পাওয়া গেছে। পূবাইলের খিলগাঁও মৌজায় ৫৫ বিঘা জমিতে মতিউর রহমানের রয়েছে আপন ভুবন পিকনিক অ্যান্ড শুটিং স্পট।

এই রিসোর্টে ১০০ টাকার টিকিট কেটে যে কেউ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরতে পারেন। নাটক, সিনেমার শুটিংয়ের জন্য ভাড়া দেয়ার বাইরেও এখানে আছে অবকাশ যাপনের সুযোগ। মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকির নামে নরসিংদীর রায়পুরার মরজালে শতবিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা হয়েছে লাকি পার্ক নামে আলিশান রিসোর্ট, যার বর্তমান নাম ওয়ান্ডার পার্ক। এই পার্ক তৈরি করতে গিয়ে জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
 
স্থানীয়রা বলছেন, লোকজন নিয়ে এসে জায়গা জোর করে দখল করেছে। জায়গা একদিকে কিনলে আরেক দিকে দখল করে মাঝখানের জায়গা ব্লক করে ফেলেন। কাউকে হয়তো অনেক দিন ঘুরিয়ে অল্প টাকা দেয়, আবার কাউকে দেয় না। টাকাওয়ালা লোকের সঙ্গে পেরে ওঠা সম্ভব হয় না।
 
ময়মনসিংহের ভালুকা থানার সিডস্টোর এলাকার পাশেই প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ওপর মতিউর রহমানের গ্লোবাল জুতা ফ্যাক্টরি। এই ফ্যাক্টরির চেয়ারম্যান তিনি নিজেই। বিভিন্ন দেশে রফতানি হয় এই ফ্যাক্টরির জুতা। ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাততলা একটি বাসার দ্বিতীয় তলায় বসবাস করেন মতিউর রহমান। জানা যায়, এই এলাকায় মতিউর রহমান, তার স্ত্রী, পরিবারের সদস্য ও বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের নামে রয়েছে একাধিক প্লট।

গাজীপুর সদর, রাজধানীর খিলগাঁও, সাভার থানার বিলামালিয়া মৌজায় তার জমির খোঁজ মিলেছে। মতিউর পরিবারের সদস্যদের রয়েছে একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি যেগুলোর দাম কোটি টাকার ওপর। এর বাইরেও বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তার শতকোটি টাকার তথ্য এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। সূত্র বলছে, এরইমধ্যে তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের খোঁজে নেমেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।
সেনাকুঞ্জে কুশল বিনিময় করলেন ‍ড. মুহাম্মদ ইউনূস-খালেদা জিয়া

সেনাকুঞ্জে কুশল বিনিময় করলেন ‍ড. মুহাম্মদ ইউনূস-খালেদা জিয়া